রবিবার, ১৫ জুন, ২০১৪

ফিল্মিস্থানঃ একটা দেশ ভাগের গল্প

সিনেমা একটা নিশি ডাক, যে ডাকে ঘর ভাঙে, দেশ ভাঙে। সিনেমা করে বেঁচে থাকতে গিয়ে মুখে রক্ত উঠে যায়, তবু নেশাটা সঞ্চারন হয় আগামী প্রজন্মে। সানি তো সেরকম একজন মানুষ যে সিনেমার সাথে থাকতে চায়, হতে চায় একজন অভিনেতা, অডিশনের পর অডিশন এবং ব্যর্থতা। এসবের মাঝেই এক বিদেশী সিনেমা দলের সাথে কাজ করার সুযোগ মিলে যায়। রাজস্থানে শুটিং হবে। সানি এই দলটার অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর এবং প্রোডাকসান বয় বটে। এভাবেই খুব রঙিন ফ্রেম জুড়ে শুরু হয়েছিল  নিতিন কক্কড় পরিচালিত ছবি "ফিল্মিস্থান"। 


এই দলটির সাথে সানি রাজস্থানে পৌঁছে শুটিং শুরু করে এবং এক রাতে তাকে অপহরণ করা হয় এবং বালির পথ বেয়ে সে পৌঁছে যায় এক দেশ থেকে আরেক দেশে। যে দেশটার নাম পাকিস্তান। এখানে সানি কে আটকে রাখা হয়। সেই বন্দি ঘরে তাঁর একমাত্র সঙ্গী বলিউড। হিন্দি সিনেমার গান, হিন্দি সিনেমার ডায়ালগ।এসবের মাঝেই তার সাথে দেখা হয়ে যায় আর এক সিনেমা পাগলের। আফতাবের। পাকিস্তানি কিন্তু পেট চালানোর জন্য সে ভারতীয় হিন্দি ছবির পাইরেটেড সিডি, ডিভিডি বিক্রি করে। 

দেশভাগটা কি খুব জরুরি? এরকম একটা রক্ত ঠাণ্ডা করে দেওয়া প্রশ্ন চুপিসাড়ে মাল্টিপ্লেক্সের ঠাণ্ডা ঘরে আপনার পাসের সীটে এসে আপনাকে প্রশ্ন করবে আর তখন থেকে আপনার গরম লাগা শুরু হবে। যে মুহূর্তে উগ্রপন্থীদের কাছে বিস্ময় প্রকাশ করবে সানি যে সে কিভাবে পাসপোর্ট ছাড়া বিদেশে চলে এলো বা পাকিস্তানি মরুভুমি অঞ্চলের বাচ্চাদের সাথে সে হিন্দি সিনেমার অঙ্গভঙ্গি করে দেখাবে তখন একবারও মনে হবে না যে একটা মানুষ কোথাও গিয়ে সীমানা পেরিয়ে অন্য দেশে আছেন।
দর্শকদের রক্তে তখন একটা অস্বস্তি শুরু হবে স্বাভাবিক ভাবেই উঠে আসবে একটা প্রশ্ন কেন এই দেশভাগ? কেন এত যুদ্ধ। দুটো দেশ একরকম পোশাক পরে, একরকম খাবার খায়, একি আকাশ দেখে। এই সাধারন গরিব মানুষ তো দেশ ভাগ চায়নি। এখান থেকে এই ফিল্মিস্থান আর হাসির ছবি থাকে না। ধীরে ধীরে হাসি মজা হরবোলার মোড়কে দেশভাগকারি মহান রাজনীতিবিদদের ( হ্যা দেশপ্রেমিক নয় ক্ষমতা লোভী রাজনীতিবিদ) প্রতি মোক্ষম প্রশ্ন ওঠা শুরু হয়। 

ধীরে ধীরে ওদিকে সানির সাথে আফতাবের বন্ধুত্ব আরও গাঢ় হতে থাকে। সানি তাঁর মিষ্টি স্বভাবের জন্য গ্রামের সাধারন মানুষের কাছে আরও প্রিয় হয়ে ওঠে। এই সিনেমাপাগল ছেলেটার কাছে সিনেমা মানে তো সব কিছু। সে অভিমান হলে ফিল্মি ডায়ালগ বলে, তাঁর বেলল্লেপানার শাস্তি হিসেবে উগ্রপন্থীরা প্রচণ্ড মারতে থাকলে সে সিনেমার মত করে বলে "মর্দ কো কাভি দরদ্ নেহি হোতা"।
 সে ম্যায়নে পেয়ার কিয়া ছবির গান শুনে বন্দি থাকা ঘরের মধ্যে  নাচতে থাকে এবং একের পর এক ডায়ালগ বলতে থাকে। তাঁর এই সিনেমাপ্রেম একটা সময় উগ্রপন্থীদেরকে কিছুটা উদার হতে বাধ্য করে। অনুমতি মেলে  “ম্যায়নে পেয়ার কিয়া” দেখার। সিনেমার সিডি মাঝপথে আটকে গেলে সানি ডায়ালগ বলে বলে  সিনটা দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেয়। আফতাব জড়িয়ে ধরে বলে "তু তো চলতা ফিরতা সিনেমা হ্যায়"। এখান থেকে অন্য একটা  প্রশ্নের উত্তর আমি খুঁজে পাই। যে মানুষটা সিনেমাকে ভালোবাসে তাঁর কাছে সিনেমা সব যে কারনে সেখানে এছবিতে কোথাও প্রেম উঠে আসেনি, কোন প্রেমিকা নেই কিন্তু রোমান্সের অভাব নেই। নারী চরিত্র বিহীন এছবিতে নায়িকার কাজ করে সিনেমা নিয়ে মানুষের ভালোবাসা, সানির ক্যামেরার প্রতি প্রেমিকার মত অন্ধ আকর্ষণ। একটা দৃশ্যে উগ্রপন্থীরা  সানির ক্যামেরা ধরে আছাড় মেরে ভাঙতে গেলে সানি ক্যামেরাটাকে দৃঢ় ভাবে আটকে ধরে রাখে তাঁর শরীরে অবিরাম চড় থাবা পড়তে থাকে। সানি ক্যামেরা ছাড়ে না কিছুতেই। কোন আদেশ বা উপদেশ সে মেনে নেয় না অবশেষে তাঁর এই ভালোবাসার কাছে হার মানতে হয় উগ্রপন্থাকে। মানুষের নেশার কাছে, ভালোবাসার কাছে হার মানতে হয় পেশী শক্তিকে।




এই সানি  ধীরে ধীরে গ্রামের মানুষের কাছে খুব কাছের মানুষ হয়ে ওঠে। সকাল হলে বাচ্চারা তাঁর বন্দিথাকা ঘরের জানালার পাশে এসে ভিড় করে বিভিন্ন সিনেমার ডায়ালগ শোনার জন্য। এখানেও ধর্মীও গোঁড়ামি যা বদলে গিয়ে একুশ শতকের রাজনৈতিক অস্ত্র হয়েছে সেই চোখ রাঙ্গানি সহ্য করতে হয় সানিকে কিন্তু এই শিশুরা তো এত কিছু বোঝেনা।  যে কারনে এই হাসি মজার দৃশ্য থেকে তীব্র শ্লেষ বেরিয়ে আসে। কেমন দেশ ভাগ যা বাচ্চাদের সাথে মিশতে দেয় না। হাসি মজারও বিষয় স্থির করে দেবে শক্তি? যে কারনে একদিন সানিকে গুলি করা হয়। গুলি গিয়ে লাগে তাঁর ডান হাতে। বৃদ্ধ হাকিম সাহেব আসেন সানির চিকিৎসা করতে। তিনি জানতে পারেন সানি ভারতের পাঞ্জাবের বাসিন্দা।  বৃদ্ধ হাকিমের চোখ ধূসর হয়ে আসে। তিনি অনর্গল জানতে চান তাঁর জন্ম ভিটের কথা। কেমন আছে তাঁর ছোটবেলার মহল্লা। সানি বলতে থাকে তাঁর ঠাকুরদার কথা যিনি মৃত্যু মুহূর্ত পর্যন্ত লাহোরের কথা বলে গেছেন, যিনি শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত বিশ্বাস করে গেছেন একদিন তাঁর কাঁটা উঠে যাবে। খাকি পোশাকের মানুষেরা ঘরে ফিরে যাবে। তিনিও ফিরবেন তাঁর জন্মভুমিতে। মজার সিনেমার সব থেকে বড় প্রশ্ন দেশ ভাগ? বৃদ্ধ হাকিম সানিকে ব্যাথা কমার ওষুধ দিয়ে মাথাতে হাত বুলিয়ে ফিরে যান। তখন মরুভুমিতে বিকেল নেমেছে সোনালি আলোতে স্নান করছে প্রকৃতি। এই ফ্রেমের ডেপ্ট ওফ ফিল্ড বরাবর মানুষটার বিদায়ী মুহূর্ত ভীষণ বিষণ্ণতা সৃষ্টি করে। বার বার মনে হয় সোনালি আলোতে স্নান করা পৃথিবীতে এত হানাহানি কেন? কেন এত তারকাটা? কেন ঈদের দিন নতুন কামিজ চেয়ে না পাওয়া মুসলিম বাচ্চা বাড়ি পালিয়ে আজ দুটো রুটির জন্য উগ্রপন্থী, কেন এতো হিংস্র দলাদলি? যে ধর্ম মানুষকে নম্র হতে শেখানো ভুলে গিয়ে অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে মন্দির ভেঙ্গে মসজিদ গড়ে আবার দিন বদলে গেলে মসজিদ ভেঙে মন্দির গড়ে। সে ধর্ম মানবতার ধর্ম হতে পারে না কখনও। 

এমন অনেক প্রশ্নের মধ্যে ভারতীয় সানির মুক্তির জন্য  গ্রামবাসীরা আর্জি জানায় উগ্রপন্থী সর্দার কাছে।সানির মুক্তি মঞ্জুর হয়। সানিকে মুক্তি দিতে সীমান্তের কাছে পৌছতে আসল সিদ্ধান্ত সামনে আসে। সানি এবং তাঁর পাকিস্তানি বন্ধু আফতাবকে হত্যা করবার চেষ্টা ব্যর্থ হয়। তারকাটা দিয়ে পেশিশক্তি শক্তি দেখিয়ে  ভাগ করা দেশের একটা মানুষ আর একটা মানুষকে সাহায্য করতে থাকে। পেছন থেকে বৃষ্টির মত অঝোরে গুলি চলতে থাকে,  মরুভুমির বুক চিরে দৌড়তে থাকে সানি আর আফতাব সামনেই ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। ব্যাকরাউন্ড জুড়ে প্রচারিত হতে থাকে ১৫ এবং ১৬ অগাস্ট স্বাধীন হওয়া দুই দেশের রাষ্ট্র নায়কের বিখ্যাত ভাষণ। সগর্বে ঘোষণা করছেন  তাদের গণতান্ত্রিক দেশ এবং ইসালামী রাষ্ট্র হয়ে ওঠার কথা। ঠিক এই পরিস্থিতে ইংরেজ চলে যাবার এতো বছর পরও দেশ ভাগ দগদগে ক্ষত হয়ে রয়ে যায় অগুনতি হাকিম সাহেবের কাছে। আজও অগুনতি সানি আর আফতাবের বন্ধুত্ব মৃত্যুবরন করে গুলিতে, রাজনীতিতে, উগ্রধর্মীয় আবেগে। বছরের পর বছর ধরে এই বিরাট ক্ষত বিরাট অভিশাপ বুকে নিয়ে দিন গোনে সীমান্তের কাঁটাতার, সীমান্ত নির্দেশক ফলক।

সোমবার, ২ জুন, ২০১৪

  গুড রোড (The Good Road): ভাল রাস্তা নাকি মার্গ অথবা একটা জার্নি


থাকব নাকো বদ্ধ ঘরে/ দেখব এবার জগতটাকে- কার লেখা বলো ত? কার? কার? ধুর এ কবিতা সিলেবাসে নেই; অনেক আগে থাকত। আর তা ছাড়া জগত ত এখন ঘরেই, পারসোনাল কম্পিউটারের ভিতর সারা জগতকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়েছে; যখন ইচ্ছে তাকে জাগিয়ে তোলো। তবু বাসে ট্রেনে উঠে জানালার ধারে সিটটা পেলে একটা অদৃশ্য হাসি তোমার মুখে ঝিলিক দেয় কেন? কেন না আমরা সবাই দৃশ্য ভালবাসি, চলমান রাস্তার দৃশ্য,জীবনের দৃশ্য। রাস্তার দৃশ্য নিয়ে কম ছবি হয়নি। তবু আবার ও একটা ছবি, রাস্তার ছবি


দূর, দূরের রাস্তা বললেই একটা ট্রাকের চিত্র অনায়াসে মনে ভাসে। ট্রাক ডাইভার পাপ্পু তার সঙ্গী সওকতের চোখে মুখে, শরীরের গড়নে দূর যাত্রার স্থায়ী ছাপ মিতভাষী, জগত সম্বন্ধে নিরুদ্বেগ তাদের যাপন। যাত্রার শুরুতেই দেখছি সওকত জ্বালিয়ে নিল ধূপ অন্যদিকে ড্রাইভার পাপ্পু জ্বালাল বিড়ি। কঠিন মাটির দেশ, গাছপালা হীন রুক্ষ ভূমি, গুজরাতের মানুষগুলোকেও তেমন রেখেছে। বৃত্তের কেন্দ্রের কাছাকাছি থাকা মানুষগুলি কিন্তু এই রুক্ষতার হল্কা বাতাস থেকে বেশ তফাতে। ছুটি কাটাতে আঠাঙ্গাসার পথে চলেছে ডেভিড, সঙ্গে বউ আর ছেলে। নাগরিকতার সমস্ত উপাদানই ঠরে পড়ছে তাদের শরীরীভাষায়। রাস্তায় এই বিচিত্রতা বিভিন্নতা থাকবেই কারন রাস্তা কারো একার নয়। হ্যাঁ এই রাস্তা কিন্তু নয়নাভিরাম নয় বরং অনেক বেশি শুখা অনেক বেশি একঘেয়ে, লম্বা। 


শিশুটি বাবা মার খুচরো ঝগড়ায় নিজেকে সামিল করতে অরাজী, চাদর ঢেকে নেয় নিজেকে বড় রাস্তায় ড্রাইভক্লান্ত ডেভিড একটু ব্রেক নিয়ে নিজেকে তাজা করার জন্যে পথের ধারে গুমটির সামনে গাড়ি থামায়। ধূমপানের ইচ্ছেটা ব্যক্তিগত রাখতে নাকি অন্য কারনে সে চুপিচুপি নেমে যায়। এদিকে আদিত্য, শিশুটির ঘুম ভেঙে গ্যাছে, সে মা কে জল চায়। ঘুমন্ত কিরন গুরুত্ব দিল না, বাইরে তখন সে বাবা কে দেখে চুপি চুপি নেমেও গেল গাড়ি থেকে।  বাইরে এসেই রাস্তা  তাকে পেয়ে বসল, পেয়ে বসল একটা কুকুরছানা। ওদিকে কেয়ারলেস ডেভিড নিশ্চিন্তে দেশীয় সিগারেট নিয়ে গাড়ি ছুটিয়ে দিয়েছে। এখানেই শুরু হচ্ছে রাস্তার গল্প। গাড়ি স্টার্টের শব্দে আদি  সম্বিত ফিরে পায়, তখন তার চোখের সামনে বেরিয়ে যাচ্ছে বাবা মা,তাদের লাল গাড়িআসলেই সে সাত বছরের একটা স্মার্ট শহুরে ছেলে, সে আমাদের রাহুল নাকি যে ম্যা বলে কান্না জুড়বে! সে দৌড় লাগাল যথাসম্ভব। কিন্তু রাস্তার গতি কে সে ধরবে কীভাবে! অন্যদিকে সমান্তরাল একটি রাস্তার গল্প ছোট্টো পুনমের, সে মুম্বাই ফেরত, চলেছে আঠাঙ্গার পথে তার ঠাম্মার কাছে। পথই তাকে নিয়ে আসে রংমহলায়, এক অন্য দুনিয়ায়, যেখানে সে অনেকটাই অনভিজ্ঞ। দূরের রাস্তায় ভেসে যায় শুখা সুর।  


দৃশ্যে ফিরে আসে রাস্তার ট্রাক ট্রাকের গন্তব্য স্থির হয়, রাস্তার নিয়ম, নিয়মের অনিয়ম,তার সরষে ও সরষের ভূত সবাই আছে রাস্তায় ক্রিমিনাল মালিকের জন্য স্মাগলিংয়ের কাজ নিতে হয় যার জন্য নগদ অর্থ হাতে পায় পাপ্পু। বাইরে উঠোনে বসে থাকা আদি বাব মায়ের ফিরে আসার অপেক্ষা করছে। গুমিটির মালিক এই অযথা ঝামেলা চান না। আঠাঙ্গার পথে ছেলে টিকে তার বাবা মায়ের কাছে পৌঁছে দেয়ার ভার দেয় ড্রাইভার পাপ্পুকে। শিশু আদিত্য উঠে পড়ে ট্রাকে, সঙ্গে মনোহরন কুকুর ছানা। এক রাস্তার গল্পে মিশে গেল অন্য রাস্তা অন্য গল্প। কেন্দ্র এসে দাঁড়াল প্রান্তে। অন্যদিকে ডেভিড ও কিরন আবিস্কার করে, তাদের ছেলে উধাও। ক্যাজুয়াল নগর সিরিয়াসলি তাদের ছেলেকে খুঁজে বেড়ায় তন্ন তন্ন করে। এখানেই দেখা মেলে পুলিশের সহযোগ, বাস্তব টুকরো চিত্র

  
প্রান্তিক হাওয়া বাতাস লাগছে নগরের গায়। ঘটি তুলে জল খেয়ে, ট্রাকবাসীর ঢিলে জামা পরে, ঝাল খাবার খেয়ে আদি পাপ্পুদের কাছের মানুষ হয়ে যায়, স্নেহ জন্মায়, নিজের ভাইঝির কথা মনে পড়ে পাপ্পুর, রুক্ষ মুখে হাসি ঝিলিক দেয়। একসাথে তারা গান হায় হাম হ্যা হিন্দুস্থানী। হ্যাঁ হিন্দুস্থানই বটে, পরিচালক এক আসনে বসালেন হিন্দুস্থানকে।  


পরের গল্প রাস্তার মোড় বদলের। আদি কে খুঁজে পাওয়ার গল্প। সমান্তরাল গল্প এখানে এসে টুকুস করে ছুঁয়ে দেয় মূল গল্প কে।ছোট্টো পুনম বারাঙ্গনা সভা থেকে মুক্তি পায়,তাকে একটি ট্রাকে তুলে দেয়া হয় তার গন্তব্যের পথে। পাপ্পুর ট্রাক ওই ট্রাকের গতির কারনেই দিশা হারিয়ে খাদে পড়ে যেতে থাকে। পুনমকেও জেনে যেতে হয়,এই সব বড় রাস্তায় থামা মানেই কিন্তু সমস্যা। তাদের ট্রাক অন্য ট্রাকের নিচে গড়িয়ে পড়াকে ভ্রুক্ষেপ না করেই চলে যায়, রাস্তার এই ত নিয়ম। ছবির স্বার্থে পাপ্পুদের বড় আঘাত লাগেনি নাকি এমনও হয়!  


আদিত্য কে খুঁজে পেয়ে প্রাণ পেল ডেভিড ,কিরন। উলটে থাকা ট্রাকের অদূরে বসে পাপ্পু বিড়ি ধরায়,তার মুখে সেই চেনা নিস্পৃহ ভাব। বয়সে যুবক সওকত কিছুবা আবেগ তাড়িত হয় আদির জন্য। পাপ্পু অভিজ্ঞ,তার কপালের বলি রেখার মতন কন্ঠ ও স্থির। উঠে চলতে শুরু করেছে সে তখন, রাস্তার পথে।

 

ছবিঃ দি গুড রোড(The Good Road)  / ডি ও পিঃ অমিতাভ সিংহ
লেখা ও পরিচালনাঃ জ্ঞান কোরেয়া  
কাস্টঃ
ডেভিডঃ অজয় গেহি
কিরনঃ সোনালি কুলকারনি
পাপ্পুঃ শামজি ডি. কারাসিয়া
সওকতঃ প্রিয়ঙ্ক উপাধ্যায়
আদিত্যঃ কেবল কাটরোডিয়া
পুনমঃ মিস পুনম রাজপুত
রিঙ্কেলঃ রিঙ্কেল কারেলিয়া  



লেখা: ঊষশী কাজলী।