ও
ক্যাহেতে হ্যে না প্যার মে কুছ সেহি গলত নেহি হোতে।।
বর্ষার
বৃষ্টি বড় দীর্ঘ সময় ধরে চলে। জানলার বাইরে তবুও চোখ মেলে তাকিয়ে থাকলে বিরক্ত
হওয়ার উপায় নেই। এ যেন কোন এক বুদ্ধিমতি গৃহবধূ যে তার সমগ্রটা দিয়ে সকলকে আগলে
রেখেছেন। কোন উপায় নেই তার কাছ থেকে মুখ
ফিরিয়ে থাকার। প্রায়ই এখন দেরি হয় ফিরতে। রাত হয়ে যায় অনেক। মাঝে মাঝে ইচ্ছে করেও
রাত করে ফিরি। কেন ফিরি মাঝে মাঝে নিজেও জানিনা। হয়ত কোন এক ভালোবাসার টানে বা
ফেলে আসা দিন গুলোকে একবার রাতের অন্ধকারে ফিরে দেখবার আশায়। আসলে ও ক্যাহেতে
হ্যায় না প্যার মে কুছ সেহি গলত নেহি হতে।
অগত্যা
হিসেব করতে বসে পড়লাম কি সেহি আর কি গলত, কুনদনের সাথে। বেনারসের গলিতে গলিতে ভগবান থাকেন। সেই জন্যই তো বলা হয় সিটি অফ গড। গঙ্গার
তীরে দশাশ্বমেধ ঘাটে ভোলেনাথের কৃপায় তাই আবার কুনদন কোন এক জোয়ার প্রেমে পড়ে যাবে। মৃত্যুর
ঠিক আগের মুহূর্তে এটাই ছিল কুনদনের শেষ শব্দ কটা। যে হয়ে যেতে পারত আধুনিক ভারতীয়
রাজনীতির নতুন মুখ, কিন্তু দিল্লির ময়দান ছেড়ে হাসপাতালের বিছানায় মুখ থেকে রক্ত
বার করে চিরতরে বিদায় নেয়। আসলে ঐ যে প্রথমেই বলে এলাম প্যার মে কুছ সেহি গলত নেহি
হতে।
অনেকদিন
বাদে বেনারস এল ছবির পর্দায় একটা দীর্ঘ সময় জুড়ে। অনেকদিন আবারও একটা প্রেমের
গল্প, ত্রিকোণ প্রেমের গল্প। অনেকদিন বাদে গলায় গামছা জড়ানো পায় চপ্পল পড়া, বেশী
পড়াশুনো না জানা প্রেমে পাগল এক যুবকের গল্প। ঠিক যেন আমার ছোটবেলায় দেখা আমার দুচারজন
বন্ধুর কথা যারা প্রেম নিবেদন করতে গিয়ে গালে হাত দিয়ে ফিরে এসেছিল। আর ছোটবেলার
প্রেম, তাদের কালো মেম সেই ছোটবেলায়ই হারিয়ে গিয়েছিল। কজন কুনদনের মতন ৮ বছর
অপেক্ষা করেছিল তা আজ বলতে পারব না।
আমার
বজবজ লোকাল স্পিড বাড়ায়, বাইরে বৃষ্টি তখনও গুড়ি গুড়ি পড়ছে। ভাবছি বাড়িতে ফোন করব
কিনা, ভাবতে ভাবতেই ওপাশের জানলার সামনে বসে থাকা ছেলে মেয়েটার দিকে চোখ যায়,
ছেলেটার হাতে মেয়েটার হাত দুজনে গভীর কথায় মগ্ন। ভালোবাসার কথা। হয়ত আবার বহুদিন
পড়ে ওদের দেখা হবে। খুব ইচ্ছে করছিল জানতে ওরা কি হিন্দু দুজনেই না একজন হিন্দু
একজন মুসলিম। জোয়া, কুনদন কেউই জানত না তাদের প্রেম পরিনিতি পাওয়ার সামনে ধর্মটা
যাজক হয়ে দাড়াবে। তাই প্রেম গড়ে ওঠার আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কে জানত এই
মেয়ে আবারও এক হিন্দু ছেলের প্রেমে পড়বে আর বাড়িতে মিথ্যে বলে তাকে বিবাহ করবার
ইচ্ছে প্রকাশ করবে। পর্দায় আমরা প্রথমবারের জন্য দেখব এক মুসলিম নারীর প্রেমে পাগল
দুই হিন্দু যুবক।
বেনারস
পার করে আমরা ঢুকে পড়ি জে এন ইউ এর ক্যাম্পাসে। সেখানে অগোচরে কখনও চে আমাদের পাশে
থাকেন কখনও বা স্টুডেন্ট ইউনিয়নের পোস্টার। আমরা একদল নতুন প্রজন্মকে দেখি একটা
নতুন স্বপ্নকে দেখি। একটা নতুন দলকে দেখি। সামাজিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় মগ্ন
একদল নতুন যুবক- যুবতিকে দেখি। যারা স্বপ্ন দেখে একটা নতুন সমাজ গড়ার। যেখানে নব
প্রজন্ম এগিয়ে আসবে, হাতে হাত রেখে সমাজের জঞ্জাল পরিষ্কার করবে। এটাই তো আশা। কিন্তু
এসবের মাঝেও বড় প্রশ্ন ওঠে মনে যে যারা সমাজকে পরিষ্কার করে নতুন প্রজন্মের কাছে
উপহার দেবে ভাবছে তারাও তো সৎ পথে থাকে না, পরীক্ষার হল থেকে রাস্তার মাঝখানে
দাড়িয়েও নৈতিক দায়িত্বটা পালন করে না। কিন্তু তা স্বত্বেও যশরাজের গালে প্রেমের
স্পর্শ লাগে। আর আমার কপালে একটা হাসি জোটে যখন আমি বলি নিজে যা পারি তাই দিয়েই
যদি পাশ করতে পারি তো করব না হলে নাইবা হল।
বজবজ
লোকাল অর্ধেকটা পথ চলে আসে। কেমন একটা ঝিমুনি লাগছে, বাতাসের শীতল স্পর্শে যেন
গায়ে কাটা লাগছে। বুঝিনা মনে হয় জ্বর আসবে হয়ত। আর মনে পড়ে কুনদন আবার দ্বিতীয়বার
সেই একই প্রেমিকার কাছে অস্বীকার যোগ্য হয়ে ওঠে। আর আবার সেই হাত কেটে হাঁসপাতালে।
কিন্তু প্রেম যে একটা এমন অনুভুতি যার জন্য অনেক সময় নিজের কাছেও হেরে যেতে হয়, আর
সেই হারার মধ্যেই যেন একটা আনন্দ থাকে। আসলে সেই মানুষটার জন্য হারা জেতা তো দূরের
কথা জীবন গেলেও যাক। কুনদন তো শেষে গিয়ে এটাই প্রমান করতে চেয়েছে। এদিকে জানলা
দিয়ে আরও জোড়ে হাওয়া এসে লাগছে বজবজ লোকাল আরও গতি বাড়াতে থাকে। আর ঐদিকে কুনদন
চলেছে তার প্রেমিকার নিজের প্রেম কে সামাজিক মর্যাদা দেওয়ার লক্ষ্যে।
এরপর এক
লড়াই শুরু হয়, চরম লড়াই। সব ছেড়ে ভিনদেশে পাড়ি দেওয়া, নিজের প্রেমিকাকে তার
প্রেমের হাতে তুলে দেওয়ার লড়াই। কিন্তু সেখানেও ব্যর্থতা। পরিস্থিতি যেন সব কেড়ে
নেয়। ঐ যে বলে ভালোবাসার পরীক্ষা। কেউ তাতে পাশ করে কেউ বা এড়িয়ে চলে। দিল্লির জে
এন ইউ এর ক্যাম্পাস এরপর কুনদন বন্দনায় গান গায়। প্রচার সর্বস্বতায় কুনদন এক
আইকনিক মুখ হয়ে ওঠে। কিন্তু এসব তারই জন্য যে একদিন তার মুখে থুতু ছিটিয়ে দিয়েছিল।
ভালোবাসা কোন বাঁধা মানে না, ভালোবাসা কারও রাগ-অভিমানের তোয়াক্কা করে না। না হলে
কি করে পেরেছিল সেদিন সিতা দাদার মুখের ওপর বলে আসতে সে অভিরূপের সাথে গরীবের
সংসার ধর্ম করবে।
কেউ
কাউকে কতটা ভালবাসলে তাকে মৃত্যুর দুয়ারে ছেড়ে আসতে পারে। কুনদন হয়ত শেষ শয্যায়
শুয়ে এটাই ভেবেছিল। যা আমরা কেউ শুনতে পাইনি। একটা প্রেম যে সবসময় তার হতে চেয়েছিল
আর একটা প্রেম যা সে চেয়েছিল তা কোনদিন তার হতে চাইনি। তাই তাকে মৃত্যু শয্যায়
শুয়ে স্মৃতি রোমান্থনের মাধ্যমে ভাবতে হয়, একটা প্রেম, একটা বন্ধু বা নিজের বাবা
আজ থেকে যাবে। হয়ত আবার কোন জোয়ার প্রেমে পড়ে এভাবেই নিজের জীবন দিয়ে তার
ভালোবাসাকে রক্ষা করে যাবে কোন এক কুনদন। আজও সে বেনারসের গলিতে ছুটে বেরাচ্ছে আর যেই মুহূর্তে জোয়ার দেখা পাবে
তারও মনে হবে “ নামাজ মে ও থি পর এইসা লাগা কে দুয়া মেরি পুরি হো রেহি হ্যায়”।
আমার
বজবজ লোকাল গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দিয়ে গোঙাতে গোঙাতে এগিয়ে যায়। গুড়িগুড়ি বৃষ্টি
শুরু হয়েছে সাথে ঝোড়ো হাওয়া। আমি পকেট হাতরাই, মোবাইল খুঁজতে থাকি, মনে হয় এই বুঝি
কোন মেসেজ এল সেদিনের মত, যে ঝড় উঠবে হয়ত, তাড়াতাড়ি বাড়ি চলে যাও। মোবাইলের আলো
জ্বলে, তবে না আজ আর কোন মেসেজ আসেনি। আমি বাড়ির পথে পা বাড়াই ঝোড়ো বৃষ্টি নিয়ে,
আর ভাবতে থাকি হয়ত একটু পড়েই মেসেজটা আসবে, বাড়ি ফিরেছ? ঝড় উঠেছে যে। আসলে সেই যে
এক বিশ্বাস প্যার মে সেহি গলত কুছ নেহি হোতে। ভালোবাসা অবিনশ্বর। এর কোন সৃষ্টি বা
ধ্বংস হয় না। শুধুমাত্র তা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের দিকে এগিয়ে যায়। তাই
সেকালের হির-রাঞ্ঝা আজকের কুনদন-জোয়ার মধ্যেও নতুন ভাবে থেকে যায় রাঞ্ঝানাতে।
ছবিঃ রাঞ্ঝানা।
অভিনয়ঃ ধানুস, সোনম কাপুর, অভয় দেওয়াল প্রমুখ।
সঙ্গীতঃ এ.আর রহমান
পরিচালনাঃ আনন্দ.এল.রাই
ছবিঃ রাঞ্ঝানা।
অভিনয়ঃ ধানুস, সোনম কাপুর, অভয় দেওয়াল প্রমুখ।
সঙ্গীতঃ এ.আর রহমান
পরিচালনাঃ আনন্দ.এল.রাই
vai ami ami gay noi, tobuo tr gale ekta chumu khelam!!! darun likhe6is!!! styi pyar me sahi galat kuch nahi hota...
উত্তরমুছুন